রিহ্যাব সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
আবাসন খাতে গ্রাহক প্রতারণা বন্ধে এ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ‘রিহ্যাব সদস্যবহির্ভূত’ প্রতিষ্ঠানগুলোকে রিহ্যাবের সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, চলতি বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ‘রিহ্যাব’ সদস্য ছাড়া কোনো হাউজিং প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে (আরজেএসসিএফ) নিবন্ধন ও নবায়ন এবং রেজিস্ট্রিসহ ট্রেড লাইসেন্স না দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করে সংগঠনটি। পরে মতামত নেয়ার জন্য রাজউক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে রিহ্যাবের বাধ্যতামূলক সদস্য হওয়ার জন্য ইতিবাচক মতামত দিয়েছে রাজউক, গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়। এর ফলে রিহ্যাবের সদস্য ছাড়া ভবিষ্যতে আর কোনো কোম্পানি নিবন্ধনের অনুমোদন পাবে না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। কারণ, রিহ্যাবের সদস্য ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান অনিয়ম করলেও ব্যবস্থা নেয়া যায় না। বাধ্যতামূলক করা হলে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে বেশ সুবিধা হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মতামতে বলা হয়েছে, রিহ্যাবের কার্যক্রম এই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট হওয়ায় আবাসন শিল্পে নিয়োজিত সব ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মসগুলোর পরিদপ্তরে নিবন্ধন ও নবায়নের ক্ষেত্রে ‘রিহ্যাব সদস্যপদ’ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
আর রাজউকের মতামতে বলা হয়েছে, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী, রাজউকের আওতাধীন এলাকায় আবাসন ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে রাজউক হতে নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান রাজউক আওতাধীন এলাকায় কোনো রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও বিপণন কার্যক্রম চালাতে পারবে না। এই আইনে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে রিহ্যাব সদস্য হওয়ায় বাধ্যবাধকতা নেই। তবে সার্বিক বিবেচনায় রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে রিহ্যাবের সদস্যপদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা সংক্রন্তে রাজউকের কোনো আপত্তি নেই।
জানা গেছে, আবাসন খাতের মর্যাদাবান সংগঠন রিহ্যাবের সদস্য নয় এমন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে রয়েছে জমি নিয়েও কাজ শুরু না করা, টাকা দেয়ার পরও ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করে উধাও হওয়া, এমন সব অভিযোগ আসছে কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। ফলে ইমেজ সংকটে পড়ছে রিহ্যাব।
এর প্রেক্ষিতে রিহ্যাব সদস্য ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে নিবন্ধন ও নবায়ন, রেজিস্ট্রি এবং ট্রেড লাইসেন্স না দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পেশ করে রিহ্যাব।
এছাড়া ওই সব ভুয়া কোম্পানিগুলো ২ থেকে ৩টি ফ্ল্যাট ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিয়ে গাঢাকা দেয়। তখন ক্রেতারা রিহ্যাবের কাছে আসে অভিযোগ নিয়ে। ক্রেতারা রিহ্যাবের কাছে অভিযোগ নিয়ে এলেও রিহ্যাব এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারে না। বাধ্য হয়ে এসব ক্রেতাকে আদালত অথবা নিকটস্থ থানায় প্রতারণা মামলা করতে হয়। যেটা রিহ্যাব মেম্বার হলে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিচারের আওতায় আনা হতো সহজেই। এজন্য নিবন্ধন বা ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে রিহ্যাবের সদস্যপদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা জরুরি বলে মনে করে রিহ্যাব।
রিহ্যাব সূত্র জানায়, ২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত শত কোটি টাকার বিনিয়োগের এ খাতে অভিযোগ রয়েছে প্রায় ১৪০০টি। যার মধ্যে রিহ্যাব কাস্টমার অ্যান্ড মেডিয়েশন সেলের মাধ্যমে সমাধানকৃত প্রায় ১৩৫০টি। বাকি অভিযোগগুলো বিচারাধীন। এর আগে ২০১৫ সালে বিভিন্ন অভিযোগের কারণে ৮টি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে রিহ্যাব থেকে বহিষ্কার করা হয়।। রিহ্যাব গঠিত মেডিয়েশন সেলে একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে ১২ জন মেম্বার আছে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনেক কোম্পানি ক্রেতাদের ফ্ল্যাট, প্লট বুঝিয়ে দিতে পারে না। জনগণ যাতে তাদের প্রতারণার শিকার না হয় সেটা অবশ্যই দেখা হবে। কোম্পানিগুলো রিহ্যাব সদস্য হলে এটা হয়তো ঘটতো না।
সূত্রে জানা গেছে, রিহ্যাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা রয়েছে ১১৩৯টি। রিহ্যাব ছাড়া আরো প্রায় ২২০০ ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। রিহ্যাব সদস্যবহির্ভূত এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় এ সেক্টরের প্রতি জনসাধারণ আস্থা হারাচ্ছে। এ শিল্পটি যেহেতু সংকটকালীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, সেহেতু এ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকল্পে নিবন্ধন ও নবায়ন এবং ট্রেড লাইসেন্সের ক্ষেত্রে রিহ্যাব সদস্যপদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা জরুরি বলে জানায় রিহ্যাব নেতারা।
রিহ্যাবের ডিরেক্টর ও প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কমিটির কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ বলেন, কিছু কোম্পানির কারণে এক লাখ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের এ খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই এসব কোম্পানির কারণে এ খাতের ইমেজ সংকট যেন না হয়। রিহ্যাব সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক করার যৌক্তিক দাবি আমরা জানিয়েছি মন্ত্রণালয়ে।
রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, সদস্য ছাড়া কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে আমরা এসব অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারি না। কারণ, তারা রিহ্যাব মেম্বার না। আমরা চাই পোশাক শিল্পের মতো যারা আছে সবাই রিহ্যাবের সদস্য হোক। তাহলে ক্রেতাসাধারণ প্রতারণা থেকে মুক্তি পাবে। রিহ্যাবের সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক করা হলে আবাসন খাত খুব উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কালিয়াকৈরে জমি জালিয়াতির ঘটনায় আরও দুটি মামলা
গাজীপুর প্রতিনিধি | তারিখ: ১৭-১১-২০১২
« আগের সংবাদ পরের সংবাদ»
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের নিরীহ কৃষকের শত শত বিঘা জমি জাল দলিলের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার কালিয়াকৈর থানায় আরও দুটি মামলা করা হয়েছে। জমি জালিয়াতির ঘটনায় এ নিয়ে কালিয়াকৈর থানায় ছয়টি মামলা করা হলো।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটাবহ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামের কৃষকের শত শত বিঘা জমি ফিয়াজ রিয়েল এস্টেটের মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও রাজ হাউজিং কোম্পানির মালিকসহ স্থানীয় ভূমিদস্যুরা মৃত এক ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ও জাল দলিলের মাধ্যমে ৫০০ বিঘা জমি হাতিয়ে নিয়েছে। ওই ঘটনায় কয়েক দিন আগে কালিয়াকৈর থানায় চারটি মামলা করা হয়।
সর্বশেষ গতকাল উপজেলার হিজলহাটি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ওয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে নয়জনকে ও মজিবুর রহমান বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে কালিয়াকৈর থানায় দুটি মামলা করেন।
মামলা হলে আসামি তমছের আলী, আবদুর রহমানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিজেদের জমি রক্ষা ও ভূমিদস্যুদের প্রতিরোধে গঠিত সংগ্রাম পরিষদের সচিব হাজী আলাউদ্দিন সিরাজী জানান, জমি জালিয়াতির মূল হোতা, মামলার প্রধান আসামি ওয়াহিদুর রহমান ও খান টিপু সোলতানকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব হুমায়ুন কবীর জানান, জমি জালিয়াত চক্রের সদস্যরা এখনো জমি জালিয়াতি করে লিখে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে।
নিজের কবর খুঁড়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি
November 18, 2016
মৃত্যুর পর পরিবারই সাধারণত শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করে। তবে কানাডায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা।
জিম্মি কিখাম নামে এক ব্যক্তি নিজের কবর খুঁড়েছেন। পুরো গ্রীষ্মজুড়ে একটু একটু করে তিনি এই কবর খুঁড়েছেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তার ৯০তম জন্মবার্ষিকী ছিল।
কবর খোঁড়ার অনুভূতি জানতে চাইলে স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘আমিই সম্ভবত কানাডাই প্রথম যে নিজেই নিজের কবর খুঁড়লাম। এই কাজে আমার পরিবারও আমাকে সহায়তা করেছে। আমি এতে গর্বিত।’
কিখাম একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। প্রায় ৬০ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় খোঁড়াখুঁড়ি কাজে বলা যায় তিনি একজন বিশেষজ্ঞও বটে।
‘আমি খুঁড়তে ভালোবসি। আমি সবসময়ই টাকার জন্য কাজ করে এসেছি। এটা দেখার বিষয় না যে, ওরা আমাকে কী খোঁড়াতে চায়।’ নিজের কর্ম সম্পর্কে সিবিসি নিউজকে এভাবেই বলছিলেন তিনি।
কবর খোঁড়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ভেবেছিলাম আমি যদি ৯০ বছর বেঁচে থাকি তবে আমি নিজের কবর খুঁড়ব।’
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, কিখাম যখন কবর খুঁড়ে তখন তার সাত সন্তানই সেসব দেখেছে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে পুরো পরিবারই তার সঙ্গে ছিল। তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় কবরস্থানে যেতেন, কিছুক্ষণ কবরে কাজ করে আবার ফিরে আসতেন।
কিখাম জানান, ‘এটা একদিক দিয়ে ভালো যে তার শেষকৃত্যের জন্য অন্য কাউকে ডাকতে হলো না। আমিই আমার কবর খুঁড়ে রাখলাম। আমি খুব খুশি যে আমার পরিবার এতে আপত্তি করেনি।’
কিখামের ছেলে জানায়, কবর খোঁড়ার পর এখন একটা পাতলা লেয়ার দিয়ে সেটাকে ঢেকে রেখেছেন কিখাম। এরপর একটা পাইন বক্স কবরের ফুটোতে রাখেন। যখন প্রয়োজন হবে, পাতলা লেয়ারটা সরিয়ে ফেলা হবে বলে তার বাবা পরিকল্পনা করেছেন। বাবার এই কাজটার সঙ্গে থাকতে পেরে তিনিও দারুণ উচ্ছসিত।
কিখাম এখনো কর্মক্ষম মানুষ। দ্রুত এই কবর প্রয়োজন হবে না বলেই ধারণা করছে তার পরিবার। ‘তবে অসময় তো বলে কয়ে আসে না’ বলেই হেসে উঠলেন কিখাম।
ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) এর পাশে ২টি রিয়েল এস্টেট ফার্ম, একটি ভিডিও ও টেলিভিশন সফটওয়্যার প্রোডাকশন হাউজ গড়ে তুলেছেন বিতর্কিত ইসলামি চিন্তাবিদ, বক্তা ও লেখক জাকির নায়েক। ২০০৫ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে তিনি মুম্বাইয়ে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
কোম্পানির রেজিস্ট্রারের বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
রিয়েল এস্টেট ফার্ম দুটি হলো- লংলাস্ট কনস্ট্রাকশন ও রাইট প্রোপার্টি সল্যুশন।
তথ্য মতে, ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এ দুই কোম্পানির প্রোমোটর কাম ডিরেক্টর পদে দায়িত্বে ছিলেন জাকির নায়েক ও তার স্ত্রী ফরহাদ জাকির নায়েক।
অর্থবছর ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে- অর্থাৎ গত ৭ বছরে আয় নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি কোম্পানি দুটি। তবে এক প্রতিবেদনে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে বলে জানানো হয়।
এদিকে ভিডিও ও সফটওয়্যার প্রোডাকশন হাউজ- হারমনি মিডিয়া উল্লেখযোগ্য আয় করেছে বলে জানা গেছে।
খবরে বলা হয়, বিদেশ থেকে ইসলামিক রিসার্চে আসা অর্থ এখন তদন্ত করছে ভারত। এর আগে এ সপ্তাহের শুরুতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, এনজিওভিত্তিক সংস্থাটি ২০১২ সাল পর্যন্ত গত ৪ বছরে ১৫ কোটি রুপি পেয়েছে। এসব অর্থ ব্রিটেন, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে আসা।
২০০৮ সালে এক প্রতিবেদনে লংলাস্ট কনস্ট্রাকশন জানায়, সংশ্লিষ্ট পার্টি আর্শাদ ওয়াহেদনা, নায়নাহ নৌশাদ নুয়ারি (তথ্য অনুযায়ী, জাকির নায়েকের বাবার নাম আব্দুল করিম মোহাম্মদ নায়েক) এবং আমির আবদুল মান্নান গাজদার (কোম্পানি পরিচালক) থেকে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে।
কোম্পানির ব্যালেন্সশিট অনুযায়ী, ২০১০ সালের মার্চ শেষে কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদে নেওয়া ঋণ দাঁড়ায় ২.৯ কোটি রুপি। ২০১৫ সালের মার্চ শেষে যা দাঁড়িয়েছিল ১৪.৮ কোটি রুপিতে। এর মধ্যে ওয়াহেদনা থেকে নেওয়া ১০.৮ কোটি রুপি। বাকি ৪ কোটি নেওয়া নুরানির কাছ থেকে।
২০০৮ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় রাইট প্রোপার্টি সল্যুশন। এর প্রোমোটর ছিলেন জাকির নায়েক, তার স্ত্রী ও বাবা। গত ৭ বছরে কোম্পানিটি রাজস্ব নিয়ে কোনো প্রতিবেদন দেখায়নি।
হারমনি মিডিয়ার সঙ্গে জাকির নায়েক সম্পৃক্ত হন ২০০৫ সালে। তিনি ২০০৬ সালের মে থেকে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সময়ে তার স্ত্রীকে পরিচালনা পর্ষদে রাখা হয়। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ জাকির নায়েক দায়িত্ব ছেড়ে দেন। আর তার স্ত্রী দায়িত্ব ছেড়ে দেন ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ।
ওয়াক্ফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়ন) বিশেষ বিধান আইন, ২০১৩
( ২০১৩ সনের ৫ নং আইন )
ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তর ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণকল্পে বিশেষ বিধান করিবার লক্ষ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তর ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণকল্পে বিশেষ বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;
সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন ওয়াক্ফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়ন) বিশেষ বিধান আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে, –
(১) ‘‘অধ্যাদেশ’’ অর্থ ওয়াক্ফ অধ্যাদেশ, ১৯৬২;
(২) ‘‘অধ্যাদেশের ধারা’’ অর্থ ওয়াক্ফ অধ্যাদেশ, ১৯৬২ এর ধারা;
(৩) ‘‘ডেভেলপার’’ অর্থ রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ২ (১৫) এ সংজ্ঞায়িত ডেভেলপার;
(৪) ‘‘দন্ডবিধি’’ অর্থ Penal Code, 1860;
(৫) ‘‘ধারা’’ অর্থ এই আইনের ধারা;
(৬) ‘‘তফসিল’’ অর্থ এই আইনের তফসিল;
(৭) ‘‘ফৌজদারী কার্যবিধি’’ অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898;
(৮) ‘‘বিশেষ কমিটি’’ বা “কমিটি” অর্থ ধারা ৮ এর অধীন গঠিত ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তর বিশেষ কমিটি বা কমিটি;
(৯) “মন্ত্রণালয়” অর্থ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়;
(১০) ‘‘রিয়েল এস্টেট’’ অর্থ রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ২(১২) এ সংজ্ঞায়িত রিয়েল এস্টেট; এবং
(১১) “সম্পত্তি” অর্থ সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর অধীন সংজ্ঞায়িত স্থাবর সম্পত্তি।
আইনের প্রাধান্য
৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন, বিধি, প্রবিধান, ওয়াক্ফ দলিল বা চুক্তিপত্রে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
হস্তান্তর পদ্ধতি
৪। (১) এই আইনের অধীন নিম্নরূপ পদ্ধতিতে সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে, যথাঃ –
(ক) বিক্রয়ের মাধ্যমে;
(খ) দানের মাধ্যমে;
(গ) বন্ধকের মাধ্যমে;
(ঘ) বিনিময়ের মাধ্যমে ;
(ঙ) ইজারা প্রদানের মাধ্যমে; এবং
(চ) অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তরের মাধ্যমে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
সম্পত্তি হস্তান্তরে সাধারণ সীমাবদ্ধতা
৫। (১) ওয়াক্ফ সম্পত্তি কেবল সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফ কিংবা উক্ত ওয়াক্ফের স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে হস্তান্তর করা যাইবে; এবং অনুরূপ হস্তান্তর ওয়াক্ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হইতে হইবে।
(২) অধ্যাদেশ এর ধারা ২(৯) মতে ওয়াক্ফে আগন্তক (stranger) এমন কোনো ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং তাহার স্বার্থে বা প্রয়োজনে ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে না।
(৩) ওয়াক্ফ কিংবা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে অনিবার্যভাবে আবশ্যক বিবেচিত না হইলে, কোনো ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রয় বা চিরস্থায়ী ইজারামূলে হস্তান্তর করা যাইবে না।
(৪) এই আইনের অধীন হস্তান্তরের জন্য বিবেচ্য কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি, যদি ওয়াকিফ তাহার ওয়ারিশগণ, পরিবারের সদস্যগণ বা নির্ধারিত ব্যক্তিগণের উপকারার্থে করিয়া থাকেন, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের লিখিত সম্মতি ব্যতিরেকে উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে না।
হস্তান্তরলব্ধ অর্থ ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা
৬। ওয়াক্ফ সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফ এর যেরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে হস্তান্তর করা হইবে, হস্তান্তরলব্ধ অর্থ কেবল অনুরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে ব্যবহার করিতে হইবে।
মোতাওয়াল্লী বা ওয়াক্ফ প্রশাসক কর্তৃক হস্তান্তর
৭। (১) অধ্যাদেশের ধারা ৩৪ এর অধীন ওয়াক্ফ প্রশাসক নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ ওয়াক্ফ সম্পত্তি ব্যতিরেকে অন্য সকল ওয়াক্ফ সম্পত্তি কেবল সংশ্লিষ্ট মোতাওয়াল্লীর লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে, ওয়াক্ফের প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে এবং ওয়াক্ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, ধারা ৪ এ বর্ণিত পদ্ধতিতে হস্তান্তর করা যাইবে।
(২) অধ্যাদেশের ধারা ৩৪ এর অধীন ওয়াক্ফ প্রশাসক নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ ওয়াক্ফ সম্পত্তি, ওয়াক্ফ প্রশাসকের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে, ওয়াক্ফের প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে এবং ওয়াক্ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, ধারা ৪ এ বর্ণিত পদ্ধতিতে হস্তান্তর করা যাইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মোতাওয়াল্লী বা ওয়াক্ফ প্রশাসক, বিশেষ কমিটির সুপারিশ এবং সরকারের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রয়, দান বিনিময়, বন্ধক বা ০৫(পাঁচ) বছরের অধিক মেয়াদের জন্য ইজারা এবং অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিতে পারিবেন না, উক্তরূপ সুপারিশ ও অনুমোদন ব্যতিরেকে হস্তান্তর করা হইলে অনুরূপ হস্তান্তর অবৈধ ও অকার্যকর হইবে।
(৪) এই ধারার অধীনওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে বিশেষ কমিটির সুপারিশ যুক্তিসংগত ও প্রয়োজনীয় বিবেচনা করিলেই কেবল সরকার অনুমোদন প্রদান করিবে।
(৫) এই ধারার অধীন ৫(পাঁচ) বছরের কম মেয়াদের জন্য ইজারামূলে হস্তান্তরিত সম্পত্তিতে কোনরূপ স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করা যাইবে না।
হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে বিশেষ কমিটি
৮। (১) এই আইনের অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠিত হইবে, যথাঃ-
(ক) ওয়াক্ফ প্রশাসক, যিনি পদাধিকারবলে উহার সভাপতিও হইবেন;
(খ) সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলীয়া, ঢাকা এর অধ্যক্ষ বা তাহার মনোনীত উক্ত মাদ্রাসার একজন অধ্যাপক;
(গ) গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক মনোনীত উক্ত অধিদপ্তরের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বা নির্বাহী প্রকৌশলী;
(ঘ) মহাপরিদর্শক নিবন্ধন কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;
(ঙ) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অনূর্ধ্ব উপ-সচিব পদমর্যাদার দুইজন কর্মকর্তা;
(চ) আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(ছ) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(জ) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(ঝ) ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক কর্তৃক মনোনীত উক্ত ফাউন্ডেশনের একজন মুফতি;
(ঞ) উপ-ধারা (২) অনুসারে নির্বাচিত ০৩(তিন) জন মোতাওয়াল্লী;
(ট) বাংলাদেশ মোতাওয়াল্লী সমিতির (যদি জাতীয়ভাবে স্বীকৃত অনুরূপ কোন সমিতি থাকে) সভাপতি বা তাহার মনোনীত উক্ত সমিতির একজন প্রতিনিধি, অথবা মোতাওয়াল্লী সমিতি না থাকিলে ওয়াক্ফ প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত কোনো ওয়াক্ফ এর একজন মোতাওয়াল্লী;
(ঠ) ওয়াক্ফ প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত তাহার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা, যিনি কমিটির সদস্য- সচিব হিসাবেও দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) ওয়াক্ফ প্রশাসনকে জাতীয়ভাবে পর পর সর্বশেষ তিন বছর গড়ে সর্বোচ্চ চাঁদা প্রদানকারী ২০ (বিশ) টি ওয়াক্ফের মোতাওয়াল্লীগণ যৌথভাবে তাঁহাদের পছন্দনীয় ০৩(তিন) জন মোতাওয়াল্লীকে বিশেষ কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচন করিবেন।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বিশেষ কমিটির মেয়াদ হইবে গঠিত হইবার তারিখ হইতে ৩(তিন) বছর, তবে নতুন কমিটি পুনর্গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান বিশেষ কমিটি দায়িত্ব পালন করিয়া যাইবে।
(৪) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য, উপযুক্ত কারণ ব্যতিরেকে, কমিটির পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে, তাহার সদস্য পদ শূন্য হইবে।
(৫) বিশেষ কমিটির মেয়াদকালে কমিটির কোনো সদস্য পদ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে শূন্য হইলে, উক্ত শূন্য পদ সাময়িক বা, ক্ষেত্রমত, অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্থায়ীভাবে পূরণ করা যাইবে।
বিশেষ কমিটির কার্যাবলী ও ক্ষমতা
৯। (১) কোনো ওয়াক্ফ সম্পত্তির বিক্রয়, দান, বন্ধক বিনিময়, ৫ (পাঁচ) বছরের অধিক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদান এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি এই আইন ও তদ্ধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আলোকে সুপারিশ করিবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত যে কোন সুপারিশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
(৩) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য, ওয়াক্ফ প্রশাসক ব্যতীত, নিজেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য আবেদনকারী হইয়া থাকিলে, তিনি বিশেষ কমিটির সংশ্লিষ্ট সভায় অংশগ্রহণ পারিবেন না।
বিশেষ কমিটির সভা
১০। (১) অন্যূন ৯ (নয়) জন সদস্যের উপস্থিতিতে বিশেষ কমিটির সভার কোরাম হইবে।
(২) কমিটির সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে; এবং মতামতের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
দানের মাধ্যমে হস্তান্তর
১১। (১) ধারা ৫ এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি অন্য কোন ওয়াক্ফ এস্টেট বা, মুনাফার ভিত্তিতে পরিচালিত নয়, এমন কোন ধর্মীয়, শিক্ষা বা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানকে দান করা যাইবে।
(২) এই ধারার অধীন দান এর প্রস্তাব কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
(৩) কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে এই ধারার অধীন কোন সম্পত্তি দান এর মাধ্যমে প্রদত্ত ও গৃহীত হইয়া থাকিলে উক্ত উদ্দেশ্য বহির্ভূত অন্য কোন উদ্দেশ্যে উক্ত সম্পত্তি ব্যবহার করা যাইবে না।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন সম্পত্তি নির্ধারিত উদ্দেশ্য বহির্ভূত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হইলে, বা ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হইলে, ওয়াক্ফ প্রশাসক অধ্যাদেশ এর ধারা ৩৪ এর অধীন উক্ত সম্পত্তি নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিতে পারিবেন।
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর
১২। (১) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করা যাইবে।
(২) এই আইনের অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তর বিশেষ কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদনের ভিত্তিতে করিতে হইবে।
(৩) এই আইনের অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে রিয়েল এষ্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ১০ এর বিধান অনুযায়ী ভূমি-মালিক ও ডেভেলপার এর মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে হইবে; এবং এতদুদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মোতাওয়াল্লী বা, ক্ষেত্রমত, ওয়াক্ফ প্রশাসক ভূমি-মালিক হিসাবে গণ্য হইবেন।
(৪) একজন ভূমি-মালিক নিজ ভূমির ক্ষেত্রে নিজ স্বার্থ রক্ষা করিয়া যেরূপ শর্তে ডেভেলপারের সহিত চুক্তি করেন, এই ধারার অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে মোতাওয়াল্লী বা, ক্ষেত্রমত, ওয়াক্ফ প্রশাসক সেরূপ শর্তে ওয়াক্ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) স্বার্থ রক্ষা করিয়া ডেভেলপারের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিবেন।
(৫) এই ধারার অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে উন্নয়ন কার্যক্রমের সকল পর্যায়ে ওয়াক্ফ প্রশাসকের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ থাকিবে এবং চুক্তিতে তাহা উল্লিখিত থাকিবে এবং সংশ্লিষ্ট চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সম্পত্তির উন্নয়ন হইতেছে কিনা এবং ওয়াক্ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষিত হইতেছে কিনা ওয়াক্ফ প্রশাসক তাহা নিশ্চিত হইবেন ।
(৬) এই ধারার অধীন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের মাধ্যমে ওয়াক্ফ সম্পত্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে রিয়েল এষ্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর অন্যান্য বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
(৭) এই ধারার অধীন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর কেবল তফসিলে বর্ণিত কোন এলাকায় অবস্থিত ওয়াক্ফ সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দরপত্র আহবানের বাধ্যবাধকতা
১৩। (১) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তির বিক্রয় বা ৫(পাঁচ) বছরের অধীক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদান বা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র আহবান করিতে হইবে।
(২) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তির বিক্রয় বা ৫(পাঁচ) বছরের অধীক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদানের প্রস্তাব সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হইবার পর, হস্তান্তরের জন্য নির্ধারিত উক্ত সম্পত্তির স্থানীয় মূল্য, সরকার নির্ধারিত প্রচলিত বাজার দর অনুযায়ী ১০(দশ) লক্ষ টাকার অধিক হইলে, জাতীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উক্ত বিক্রয় বা ইজারা সম্পাদন করিতে হইবে, অন্যথায় স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহবান বা উন্মুক্ত নিলাম অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হস্তান্তর সম্পাদন করা যাইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৫ এর অধীন নিবন্ধিত রিয়েল এষ্টেট ডেভেলপারের মধ্য হইতে অন্যূন ১০ (দশ) এবং অনূর্ধ ১৫ (পনের) টি প্রাক-উপযুক্ত (prequalified) ডেভেলপারের একটি প্যানেল নির্বাচন করিয়া নির্ধারিত সময়ের জন্য সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(৪) এই ধারার অধীন কোন দরপত্র বা নিলামে উদ্ধৃত বা প্রস্তাবিত দর যোগসাজসী বা অস্বাভাবিকভাবে কম প্রতীয়মান হইলে ওয়াক্ফ প্রশাসক, বা ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, ওয়াক্ফের স্বার্থে, উক্ত নিলাম বা দরপত্র বাতিল করিতে পারিবে।
উন্নয়নের জন্য অর্থায়নের পদ্ধতি
১৪। ওয়াক্ফ সম্পত্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে অর্থায়ন করা যাইবে, যথাঃ –
(ক) ওয়াক্ফ প্রশাসনের নিজস্ব তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ দ্বারা;
(খ) ওয়াক্ফের নিজস্ব তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে;
(গ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদানের মাধ্যমে;
(ঘ) ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে;
(ঙ) দোকানদার বা ভাড়াটিয়াদের নিকট হইতে জামানত বা সালামীর অর্থ অথবা অগ্রিম ভাড়ার টাকা গ্রহণের মাধ্যমে;
(চ) দোকানঘর, আবাসিক ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক স্পেস এর পজেশন বিক্রয়ের মাধ্যমে;
(ছ) ডেভেলপারের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে; এবং
(জ) কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার অর্থ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিনিয়োগের মাধ্যমে।
স্বীয় উদ্যোগে ওয়াক্ফ সম্পত্তির উন্নয়ন
১৫। কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য কোন রিয়েল এস্টট ডেভেলপার এ সাথে কোন চুক্তি না করিয়া, উহার নিজস্ব অর্থে বা অনুমোদিত কোন উৎস হইতে সংগৃহীত পুঁজি বা গৃহীত ঋণ লগ্নি করিয়া এবং ওয়াক্ফ সম্পত্তির মালিকানা অক্ষুন্ন রাখিয়া উক্ত ওয়াক্ফ সম্পত্তি বা উহার অংশ উন্নয়ন করিলে এই আইনের কোন বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
ওয়াক্ফ প্রশাসকের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ
১৬। (১) ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফের বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে এবং সংশ্লিষ্ট ওয়াক্ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ কিনা, এবং বিশেষ করিয়া কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি বন্ধক রাখিয়া কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হইতেছে কিনা ওয়াক্ফ প্রশাসক তাহা কঠোরভাবে পরিবীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন।
(২) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি বন্ধক রাখিয়া ঋণ গ্রহণ করিবার ক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি বন্ধক প্রস্তাব সুপারিশ করিবার পূর্বে কঠোরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করিয়া নিশ্চিত হইবে যে, গৃহিতব্য ঋণ সিডিউল অনুযায়ী পরিশোধ করা সম্ভব হইবে।
অপরাধ
১৭। (১) এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালন করিবার ক্ষেত্রে-
(ক) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য ইচ্ছাকৃতভাবে নিজে অবৈধভাবে লাভবান হইবার বা অন্য কাহাকেও অবৈধভাবে লাভবান করাইবার উদ্দেশ্যে কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) স্বার্থের পরিপন্থী কার্য করিয়া থাকিলে, বা
(খ) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মোতাওয়াল্লী, রিসিভার বা সরকারী কর্মকর্তা এই আইনের অধীন বিশেষ কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিলে, বা
(গ) কোন ওয়াক্ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তরলব্ধ অর্থ ওয়াক্ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) যেরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে সম্পাদন করা হইয়াছে, অনুরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে ব্যবহার না করিয়া ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিলে,
তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।
(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধ করিলে তিনি অনুর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
তদন্ত ও বিচার পদ্ধতি
১৮। এই আইনের অধীন তদন্ত, বিচার ও আপীল ফৌজদারী কার্যবিধিতে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী হইবে।
অপরাধের অ-আমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা
১৯। ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) এবং জামিনযোগ্য (bailable) হইবে।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ ও বিচার
২০। (১) ওয়াক্ফ প্রশাসক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না।
(২) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে ওয়াক্ফ প্রশাসক এর বিরুদ্ধে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না।
বার্ষিক প্রতিবেদন
২১। (১) ওয়াক্ফ প্রশাসক, প্রতি ইংরেজী বৎসরে এই আইনের অধীন ওয়াক্ফ সম্পত্তির হস্তান্তরের একটি পরিপূর্ণ প্রতিবেদন পরবর্তী ইংরেজী বৎসরের ৩১ মার্চ তারিখের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদনে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, হস্তান্তরিত সম্পত্তির বিবরণ ও পরিমাণ, হস্তান্তর মূল্য, হস্তান্তরের উদ্দেশ্য, হস্তান্তরের তারিখ, হস্তান্তরের সুপারিশ ও অনুমোদনের তারিখ, ইত্যাদি উল্লেখ থাকিবে।
অস্পষ্টতা দূরীকরণ
২২। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ওয়াক্ফ প্রশাসক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদ্ধীন প্রণীত কোন বিধির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
তফসিল সংশোধনের ক্ষমতা
২৫। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।
আইনের ইংরেজি পাঠ
২৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।
(২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নিয়ে নানা খবর
« on: June 08, 2011, 12:45:23 PM »
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নিয়ে নানা খবর
ফ্ল্যাটবাড়ি :ধরাছোঁয়ার বাইরে
সব মানুষের স্বপ্ন থাকে একটা সুন্দর বাড়ি। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ঘরে ফিরে সবাই নিতে চায় একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস। তাই তো ঢাকার বাইরের জেলা থেকে অভিবাসী হয়ে ঢাকায় আসা মানুষের স্বপ্ন থাকে একটি আধুনিক অনুষঙ্গের মনোরম ফ্ল্যাটের। কিন্তু ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্ল্যাটের দাম। ফলে উচ্চবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তরাই যেখানে ফ্ল্যাট কিনতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে, সেখানে মধ্যবিত্তের কথা বলাই বাহুল্য।
ঢাকার একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে ২০ বছর ধরে চাকরি করছেন বেলায়েত হোসেন। ঢাকায় স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন শুরু থেকেই। তিনি বলেন, পাখিরও একটি ঠিকানা আছে অথচ আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষের সেই ঠিকানাটুকুও নেই। তিনি আরও বলেন, উপার্জনের সিংহভাগই চলে যায় বাড়িভাড়া আর পাঁচ সদস্যের পরিবারের খাদ্যের জোগান দিতে। তার মতে, ফ্ল্যাটের যে দাম বেড়েছে তাতে সারাজীবন সৎ পথে আয় করে কারও পক্ষে একটি ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার জন্য যে ব্যাংক লোন পাওয়া যায় তাতে যে পরিমাণ সুদ আরোপ করা হয় তা একটি ফ্ল্যাটের দ্বিগুণ দাম হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে , ফ্ল্যাট ব্যবসায়ী আর ব্যাংক লাভবান হচ্ছে। গ্রাহকের কোনো লাভ হচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর এলাকাভেদে গত ১০ বছরে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত। বারিধারায় প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাটের দাম ৪৫০০ থেকে ১১০০০, ধানমণ্ডিতে ৬৯০০ থেকে ৯০০০, মিরপুরে ৩৫০০ থেকে ৪৫০০, শান্তিনগরে ৪৪০০ থেকে ৬০০০, বসুন্ধরায় ৮০০০ থেকে ৯০০০, মোহাম্মদপুরে ৩০০০ থেকে ৫৫০০, গুলশানে ১০০০০ থেকে ১৫০০০, উত্তরায় ৩৮০০ থেকে ৫৯০০। ঢাকার বাইরেও ফ্ল্যাটের উচ্চ মূল্য লক্ষণীয়। এতে এলাকাভেদে ১২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের দাম পড়বে ৪০ লাখ থেকে কোটির ওপরে। ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে স্পেস ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার ওহাহিদুজ্জামান জানান, গত এক দশকে জমি এবং রড, সিমেন্ট, ইট, বালু, পাথর, রঙ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, গ্গ্নাস, পিভিসি পাইপ, টাইলস ও মোজাইকসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর দামও বেড়েছে। এ ছাড়াও ফ্ল্যাট নিবন্ধন ও ভূমি নিবন্ধনে খরচ বেড়ে যাওয়াকেও ফ্ল্যাটের দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গত এক দশকে জমির দাম বেড়েছে প্রায় ১০০০ শতাংশ, ইটের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ, সিমেন্ট ৩০০ শতাংশ, রড ৩০০ শতাংশ। এ অবস্থায় সরকার এই শিল্পের দিকে সুনজর না দিলে আগামীতে ফ্ল্যাটের দাম আরও বেড়ে যাবে। ফলে মধ্যবিত্ত কেন, উচ্চ মধ্যবিত্তদেরও নিজের ফ্ল্যাটের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সব সময়ই স্থির আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার ওপর তীব্রভাবে আঘাত করে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সমানুপাতিক হারে তাদের আয়ের সঙ্গতি না বাড়ায় তাদের জীবনযাত্রার মান কমে যায়। ফলে তারা ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দিকে নজর দেয়। সে ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট হয়ে ওঠে বিলাসিতা। অথচ বাসস্থান একটি মৌলিক চাহিদা। জমি বা ফ্ল্যাট মালিকরা বসে থেকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সুবিধা ভোগ করে। তবে সরকার ফ্ল্যাট বা জমির মূল্যবৃদ্ধির ওপর প্রতি চার বছর পরপর করারোপ করে সেই টাকা ফ্ল্যাট নির্মাণে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবতে পারে। এতে করে একদিকে যেমন উৎপাদনহীন ভূমি ব্যবসা অনুৎসাহীত হবে, অন্যদিকে মধ্যবিত্ত মানুষের আবাসন সমস্যা কিছুটা সমাধান হতে পারে।
আন্তর্জাতিক
কোটি টাকাসহ আটক দুই রিয়েল এস্টেট এজেন্ট
অনলাইন ডেস্কপ্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:৫৪:৫৪
ভারতে পুরাতন ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোটের এক কোটি টাকাসহ দুই রিয়াল এস্টেট এজেন্টকে আটক করেছে নাভি মুম্বাই ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের সদস্যরা।
শুক্রবার ওই দুই ব্যক্তি পুরাতন নোট বদলে নতুন নোট নেয়ার চেষ্টা সময় আটক হন।
পুলিশ এ সময় আরও দুই ব্যক্তিকে আটক করে। আটক অপর দুই ব্যক্তির ৩০ শতাংশ কমিশনের বিনিময়ে পুরাতন নোট বদলে নতুন নোট দেয়ার কথা ছিল।
নাভি মুম্বাই ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের সিনিয়র ইনস্পেক্টর অশোক রাজপুত বলেন, সেক্টর ২৮ এর ভাসি এলাকায় পুরাতন নোট বদলে নতুন নোট নেয়ার সময় জড়িতদের আটক করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
দেশে ১৩২ জঙ্গি গ্রুপ
শিমুল মাহমুদ ও জুলকার নাইন
ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর- বাংলাদেশে জঙ্গি ও মৌলবাদী গ্রুপের সংখ্যা ১৩২টি। ২০১৩ সালের পর থেকেই এদেশের জঙ্গি গ্রুপগুলো আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গিবাদী সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এবিটি ইতিমধ্যে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। জেগে উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিতরা। এ ছাড়া জঙ্গিদের সবাইকে একক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার একটি প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে জেএমবি ও এবিটি। এ ছাড়া ২০১৪ সালে বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতির বার্ষিক নিট মুনাফা আনুমানিক ২ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। বিগত চার দশকে পুঞ্জীভূত নিট মুনাফার পরিমাণ হবে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। দেশে ২৩১টি বেসরকারি সংস্থাসহ (এনজিও) ট্রাস্ট-ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মৌলবাদের অর্থনীতি ধারণার প্রবর্তক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের প্রকাশিতব্য গবেষণা গ্রন্থ ‘বাংলাদেশে মৌলবাদের রাজনৈতিক অর্থনীতি ও জঙ্গিবাদ : মর্মার্থ ও করণীয়’-এ তথ্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি প্রকাশিত বইটি চলতি মাসের শেষার্ধে প্রকাশ হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলোর বৈশিষ্ট্য ও বিকাশকাল বিশ্লেষণ ও গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য সমন্বয় করে ড. আবুল বারকাত বলেছেন, ১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল হুজি-বি’র আনুষ্ঠানিক গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিবাদী জিহাদের প্রথম পর্ব বা ‘দাওয়া’ স্তরের শুরু। অতিক্রম করেছে দ্বিতীয় স্তর ‘ইদাদ’। এখন তাদের অবস্থান জিহাদের তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের মধ্যবর্তী কোনো পর্যায়ে অর্থাৎ ‘রিবাত’ ও ‘কিলাল’-এর মাঝে কোনো একপর্যায়ে। তবে সব কিছু বিচার-বিশ্লেষণে আমি মনে করি, তাদের অবস্থান জিহাদি সর্বশেষ পর্যায় ‘কিলাল’-এর কাছাকাছি অর্থাৎ তারা ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে সশস্ত্র সম্মুখযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। এ পরিস্থিতি মারাত্মক ও মহাবিপর্যয়কর।
ড. আবুল বারকাত লিখেছেন, উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বাহক শক্তিটি ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে জনগণের সম্পদ হরিলুট করেছে এবং পরবর্তীকালে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনে ১৯৭০-৮০-র দশকে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক অর্থ সরবরাহ পেয়েছে; এসব অর্থ-সম্পদ তারা সংশ্লিষ্ট আর্থ-রাজনৈতিক মডেল গঠনে বিনিয়োগ করেছে; অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের বিনিয়োজিত প্রতিষ্ঠান উচ্চ মুনাফা করছে; আর এ মুনাফার একাংশ তারা ব্যয় করছে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে, একাংশ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রসারে, আর (কখনো কখনো) একাংশ নতুন খাত-প্রতিষ্ঠান সৃষ্টিতে।
গবেষণার তথ্যানুসারে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতির বার্ষিক নিট মুনাফা আনুমানিক ২ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। এ মুনাফার সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ ৬৬৫ কোটি টাকা আসে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে (ব্যাংক, বীমা, লিজিং কোম্পানি ইত্যাদি); দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮.৮ শতাংশ ৪৬৪ কোটি টাকা আসে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ট্রাস্ট ও ফাউন্ডেশন থেকে; বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খুচরা, পাইকারি, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে ২৬৬ কোটি টাকা আসে ১০.৮ শতাংশ; ওষুধ শিল্প ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে আসে ১০.৪ শতাংশ ২৫৬ কোটি টাকা; স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসে ৯.২ শতাংশ ২২৬ কোটি টাকা; রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে আসে ৮.৫ শতাংশ ২০৯ কোটি টাকা, সংবাদ মাধ্যম ও তথ্য প্রযুক্তি থেকে আসে ৭.৮ শতাংশ ১৯৩ কোটি টাকা, আর রিকশা, ভ্যান, তিন চাকার সিএনজি, কার, ট্রাক, বাস, লঞ্চ, স্টিমার, সমুদ্রগামী জাহাজ, উড়োজাহাজের মতো পরিবহন-যোগাযোগ ব্যবসা থেকে আসে ৭.৫ শতাংশ বা ১৮৫ কোটি টাকা। বিগত চল্লিশ বছরে (১৯৭৫-২০১৪) মৌলবাদের অর্থনীতি সৃষ্ট ক্রমপুঞ্জীভূত নিট মুনাফার মোট পরিমাণ হবে বর্তমান বাজার মূল্যে কমপক্ষে ২ লাখ কোটি টাকা।
জঙ্গিবাদের কার্যক্রমকে মারাত্মক ও মহাবিপর্যয়কর বলার কারণ ব্যাখ্যা করে ড. আবুল বারকাত বলেন, সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলাটিম ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহা-জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে ফেলেছে এবং আল-কায়েদা থেকে তারা অস্ত্র সরবরাহ, বোমা প্রস্তুত পদ্ধতি, অস্ত্র প্রশিক্ষণ (ম্যানুয়ালসহ), টার্গেট নির্ধারণ ও তা বাস্তবায়নে গেরিলা কায়দা-কানুন, অর্থ সরবরাহ, অর্থের উৎস পোক্তকরণ, নিরীহ মুসলমানদের জিহাদের পক্ষে আনার ‘বিজ্ঞানসম্মত’ পথ পদ্ধতি, প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি পাচ্ছে; তারা ইতিমধ্যে শুধু আল-কায়েদাই নয়, অনুরূপ অন্যান্য বিদেশি জঙ্গি সংগঠন-সংস্থা-প্রতিষ্ঠান-ট্রাস্ট-ফাউন্ডেশন-বেসরকারি সংস্থা-মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছে এবং ওদের পরামর্শে সক্রিয়; তৃতীয়ত, হিজবুত তাহরীরসহ আরও কিছু নিষিদ্ধ অথবা এখনো নিষিদ্ধ হয়নি এমন সব জঙ্গি সংগঠনও অনুরূপ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে; নিষিদ্ধঘোষিত জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলাটিমসহ বেশ কিছু ইসলামী জঙ্গি সংগঠন দেশের সব ইসলামী জঙ্গি সংগঠনসহ ইসলামী জঙ্গিবাদ সমর্থনকারী সব সংগঠন-সংস্থা-প্রতিষ্ঠানকে (মৌলবাদের অর্থনীতির প্রতিষ্ঠানসহ) একক একটি প্লাটফর্মে দাঁড় করানোয় সক্রিয় রয়েছে; এদেশের সব ইসলামী জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার মহাপরিকল্পনা ধারণ করে অর্থাৎ ওদের সবাই বিশ্বাস করে যে, ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই; ওরা যখন যেভাবে যেসব বর্বরতম নৃশংস পথ-পদ্ধতি অবলম্বনে মুক্তচিন্তার মানুষ খুন-হত্যা-জখম করছে, অর্থনীতির প্রাণ সংযোগসমূহ বিনষ্ট করে অর্থনীতিকে বিকল করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, প্রশাসন-আদালত-বিমান প্রতিষ্ঠান-দেশজ/সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান (প্রাতিষ্ঠানিক উৎসব) ও ব্যক্তি হত্যায় উদ্যত এসবই তো যথেষ্টমাত্রায় প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিত্ব বিকাশ স্তরের মানদণ্ডের প্রাথমিক কোনো পর্যায়ে অবস্থান করছে না।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ড. বারকাত বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন। এগুলো হলো— মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করে শাস্তি কার্যকর করা (সম্ভব হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে)। জঙ্গিদের অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে সরকারের যা কিছু জানা আছে তা অতি দ্রুত গণমাধ্যমে প্রকাশ-প্রচার করা। জঙ্গি অর্থায়নের উৎসমুখ বন্ধ করা। মৌলবাদের অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট (শিল্প, সংস্কৃতি ট্রাস্ট, ফাউন্ডেশনসহ) প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের তৃতীয়-পক্ষীয় অডিটের মাধ্যমে জামায়াত-জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। জঙ্গিদের সংশ্লিষ্ট সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা। জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী গোয়েন্দা নজরদারি সিস্টেম অনেক বেশি তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর ও দ্রুত ফলপ্রদ ও কার্যকর করার জন্য সমন্বিত কার্যক্রম জোরদার করা। সরকারের জঙ্গি দমন ও গ্রেফতার জঙ্গিদের মধ্যে জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা-সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি পরিচালন করা। জঙ্গিদের অস্ত্রের উৎসমুখ বন্ধ করা এবং একই সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যেই যারা জঙ্গিত্ব-প্রমোটর তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকার থেকে তাদের বহিষ্কার করা। ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার আন্দোলন-সংগ্রাম জোরদার করা।
জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় গণসচেতনার ওপর জোর দিয়েছেন ড. বারকাত। তিনি বলেন, গণসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডে সব ধরনের পথ-পদ্ধতি-মাধ্যম ব্যবহার করা প্রয়োজন। তবে সঙ্গত কারণে জুমার নামাজ হয় এমন মসজিদে জুমার খুতবার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে মোট ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯৪০টি জামে-মসজিদে গড়ে প্রতি সপ্তাহে জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করেন ২ কোটি ৬৪ লাখ মুসল্লি, যারা আবার বাড়িতে ফিরে মোট ১০ কোটি ৪৪ লাখ ব্যক্তির সঙ্গে কথাবার্তা বলেন।
যত জঙ্গি গ্রুপ ও সমর্থনকারী সংস্থা : বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড-সংশ্লিষ্ট অথবা জঙ্গিবাদ সমর্থনকারী ইসলামী সংস্থাগুলো হলো— (সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ও কালো তালিকাভুক্তসহ) আফগান পরিষদ, আহলে হাদিস আন্দোলন, আহলে হাদিস যুব সংঘ (এএইচজেএস), আহলে হাদিস তবলিগা ইসলাম, আহসাব বাহিনী (আত্মঘাতী সুইসাইড গ্রুপ), আল হারামাইয়েন (এনজিও), আল হারাত আল ইসলামিয়া, আল ইসলাম মারর্টারস ব্রিগেড, আল ইসলামী সংঘতি পরিষদ, আল জাজিরা, আল জিহাদ বাংলাদেশ, আল খিদমত, আল কুরত আল ইসলামী মারর্টারস, আল মারকাজুল আল ইসলামী, আল মুজাহিদ, আল কায়দা, আল সাঈদ মুজাহিদ বাহিনী, আল তানজীব আল উম্মাহ, আল্লার দল (সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), আল্লার দল ব্রিগেড (আত্মঘাতী দল), আল ইয়াম্মা পরিষদ, আমানাতুল ফারকান আল খাইরিয়া, আমিরাত-ই-দিন, আমরা ঢাকাবাসী, আনজুমানে তালামজিয়া ইসলামিয়া, আনসার-আল-ইসলাম, আনসারুল্লাহ মুসলামিন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) (২০০৫ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), আরাকান আর্মি (্এ এ), আরাকান লিবারেশন ফ্রন্ট (এএলপি), আরাকান লিবারেশন পার্টি, আরাকান মুজাহিদ পার্টি, আরাকান পিপুলস আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা ফোর্স, আরাকান রোহিঙ্গা ইসলামিক ফ্রন্ট, আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এআরএনও), ইউনাইটেড স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব আরকান মুভমেন্ট, ইবতেদাদুল-আল মুসলিমা, ইকতেদুল তালাহ-আল মুসলেমিন, ইকতেদুল তুলাহ-আল-মুসলেমিন (আইটিএম), ইন্টারন্যাশনাল খাতমে নব্যুয়ত মুভমেন্ট, ইসলাহুল মুসলেমিন, ইসলামী বিপ্লবী পরিষদ, ইসলামী জিহাদ গ্রুপ, ইসলামী লিবারেশন টাইগার অব বাংলাদেশ (আইএলটিবি), ইসলামী প্রচার মিডিয়া, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ইসলামী সমাজ (সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (সারকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, ইয়ং মুসলিম, এবতেদাতুল আল মুসলামিন, এহসাব বাহিনী, ওয়ারেট ইসলামিক ফ্রন্ট, ওয়ার্ড ইসলামিক ফ্রন্ট ফর জিহাদ, ওলামা আঞ্জুমান আল বাইয়্যানাত (সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), কালেমায়ে-জামাত, কালেমা-ই-দাওয়াত (অধ্যাপক আবদুল মজিদ এ দলের প্রধান), কতল বাহিনী (আত্মঘাতী গ্রুপ), খাতেমী নব্যুয়াত আন্দোলন পরিষদ বাংলাদেশ (কেএনএপিবি), খাতেমী নব্যুয়াত কমিটি বাংলাদেশ, খিদমত-ই-ইসলাম, খিলাফত মজলিশ, খিতল-ফি-সাবিলিল্লাহ, খিলাফত-ই- হুক্মত, ছাত্র জামায়েত, জাদিদ-আল-কায়েদ, জাগ্রত মুসলিম বাংলা, জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) (২০০৫ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), জামাত-এশ-সাদাত, জামায়াত-উল-ইসলাম মুজাহিদ, জামা’আতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) (২০০৫ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), জামাত-ই-মুদারাসিন বাংলাদেশ, জামাত-ই-তুলবা, জামাত-ই-ইয়াহিয়া, জামাত-উল-ফালিয়া, জামাতুল ইসলাম মুজাহিদ, জামাতে আহলে হাদিস, জামেয়া মোহাম্মদিয়া আরাবিয়া, জামিয়াতি ইসলামী সলিডারিটি ফ্রন্ট, জামিয়াতুল ইয়াহিয়া উত তুরাজ, জঙ্গি হিকমত, জয়শে-মুস্তাফা, জয়শে-মোহাম্মদ, জামাতুল-আল-শাদাত, ডেমোক্রেটিক পার্টি অব আরাকান, ন্যাশনাল ইউনাইটেড পার্টি অব আরকান (এনইউপিএ), নিজামায়ে ইসলামী পার্টি, ফার ইস্ট ইসলামী, তা আমির-উল-দীন বাংলাদেশ (সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), তাহফিজ হারমাইন, তামির উদ্দিন বাংলাদেশ, তানজিম বাংলাদেশ, তানজিন-ই-খাতেমি নব্যুয়ত, তাওহিদী জনতা, তাওহিদ ট্রাস্ট (সরকারিভাবে কালো তালিকাভুক্ত), দাওয়াত-ই-ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলাম রক্ষা কমিটি, বাংলাদেশ জামায়াত-উল-তালাবা-ই-আরাবিয়া, বাংলাদেশ সন্ত্রাস বিরোধী দল, বিশ্ব ইসলামী ফ্রন্ট, মজলিশ ই তাফিজা খাতেমি নব্যুয়ত, মুজাহিদ অব বাংলাদেশ, মুজাহিদী তোয়াবা, মুসলিম লিবারেশন ফ্রন্ট অব বার্মা, মুসলিম মিল্লাত শরিয়াহ কাউন্সিল, মুসলিম মুজাহিদীন বাংলাদেশ (্এমএমবি), মুসলিম রক্ষা মুজহাদিল, রোহিঙ্গা ইনডিপেন্ডেস ফোর্স, রোহিঙ্গা ইসলামী ফ্রন্ট, রোহিঙ্গা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট, রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন, রিভাইভাল অব ইসলামী হেরিটেজ (এনজিও), লিবারেশন মিয়ানমার ফোর্স, লুজমা মককা আল খায়েরা, শাহাদাত-ই-আল হিকমা (২০০৩ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), শাহাদাত-ই-নব্যুয়াত, শহীদ নাসিরুল্লাহ খান আরাফাত বিগ্রেড (আত্মঘাতী গ্রুপ), সত্যবাদ, সাহাবা সৈনিক, হরকত-ই-ইসলাম আল জিহাদ, হরকাত-উল জিহাদ-আল-ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি) (২০০৫ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), হায়েতুল ইগাসা, হেফাজতে খাতেমী নব্যুয়ত, হিজব-উত-তাহিরির (২০০৯ সালে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত), হিজবা আবু ওমর, হিজবুল মাহাদী, হিজবুল্লাহ আদেলী বাংলাদেশ, হিজবুল্লাহ ইসলামী সমাজ, হিজবুত-তাওহিদ ও হিকমত-উল-জিহাদ।
ফ্ল্যাটের টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন চান না গৃহায়ণ মন্ত্রী
প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৭:২৯ | আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৬:৫১ | চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
আবাসন খাতে মন্দা কাটাতে ফ্ল্যাট কিনলে ক্রেতাদের টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন না করতে জাতীয় রাজস্ব রোর্ড ও দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে রিহ্যাব ফেয়ার-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। রেডিসন ব্লু হোটেলের মেজবান হলে চার দিনের এই মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত। মেলায় ৭২টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৯০টি স্টল আছে। এতে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো ধরনের মূল্য ছাড়সহ নানা আকর্ষণীয় অফার নিয়ে এসেছে। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাসও দিচ্ছে তারা।
গত কয়েক বছর ধরেই ফ্ল্যাটের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে বলে আসছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। এমনকি দাম কমার পরও বিক্রি হচ্ছে না হাজার হাজার বাড়ি। এ জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা চাইছেন আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব সদস্যরা। এ জন্য ক্রেতার টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে না চাওয়ার দাবি ছিল। এ বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই বলে জানালেন গৃহায়নমন্ত্রী । বলেন, ‘সরকারের কিছু প্রণোদনা দিতে হবে।’
আবাসন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা আপনারা অ্যাপর্টমেন্ট করেন- আপনারা রড, সিমেন্ট, টাইলস, কমোড, গ্লাস, ডোরসসহ আড়াইশ ধরনের উপকরণ লাগাচ্ছেন, এগুলো ট্যাক্স-ভ্যাট দিয়ে আসছে। তারপর অ্যাপার্টমেন্ট করছেন। এরপরে ১৪ পারসেন্ট আবার রেজিস্ট্রেশন ফিও দিচ্ছেন। এরপরে যদি এনবিআর-দুদক এসে বলে যে, আপনি টাকাটা কোথা থেকে পাইলেন? এটা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘হাউজিং সেক্টরে ১৪ পারসেন্ট রেজিস্ট্রশন ফি দিচ্ছে। এরপরে জিজ্ঞেস করতেছে, এনবিআরের চেয়ারম্যান... যে আপনি কোথায় টাকা পাইলেন। দুদক এসে বলতেছে কোথা থেকে টাকা পাইলেন। এটা থেকে মুক্ত করতে হবে। না করলে এখান থেকে টাকা চলে যাবে। মানুষ বাইরে অ্যাপার্টমেন্ট কিনবে।’
অ্যাপার্টমেন্টের নিবন্ধন ফি কমাতে আবাসন ব্যবসায়ীদের দাবির সঙ্গেও একমত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী। বলেন, তিনিও চান এটা ১৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাত শতাংশ করা হোক।
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, রিহ্যাবের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ূম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকাটাইমস/০৮ফেব্রুয়ারি/ডব্লিউবি
হ্যালো,
ReplyDeleteএই জনসাধারণকে জানাতে হয় যে একজন সম্মানিত ব্যক্তিগত ঋণ ঋণদাতা, মিঃ রেমন্ড মিলিয়ন, যে সমস্ত আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তাদের জন্য আর্থিক সুযোগ খোলা হয়েছে। আপনি কি আপনার ঋণ পরিষ্কার করতে অবিলম্বে ঋণ প্রয়োজন বা আপনার ব্যবসা উন্নত করতে একটি মূলধন ঋণ প্রয়োজন? আপনি কি কখনও ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থা দ্বারা অস্বীকার করা হয়েছে? শুধু কারণ, আমরা এখানে আপনার সব আর্থিক সমস্যা জন্য। আমরা জনসাধারণের জন্য ২% সুদ হার, কোম্পানী এবং সম্প্রদায়কে একটি স্পষ্ট এবং সহজে বোঝার পদ্ধতিতে, এই শর্তাবলী এবং শর্তাবলী প্রদান করি। কোন ক্রেডিট চেক প্রয়োজন, 100% নিশ্চিত।
আমাদের ইমেল করুন: (raymondmillionloanfirm@gmail.com)
হ্যালো,
ReplyDeleteএই জনসাধারণকে জানাতে হয় যে একজন সম্মানিত ব্যক্তিগত ঋণ ঋণদাতা, মিঃ রেমন্ড মিলিয়ন, যে সমস্ত আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন তাদের জন্য আর্থিক সুযোগ খোলা হয়েছে। আপনি কি আপনার ঋণ পরিষ্কার করতে অবিলম্বে ঋণ প্রয়োজন বা আপনার ব্যবসা উন্নত করতে একটি মূলধন ঋণ প্রয়োজন? আপনি কি কখনও ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থা দ্বারা অস্বীকার করা হয়েছে? শুধু কারণ, আমরা এখানে আপনার সব আর্থিক সমস্যা জন্য। আমরা জনসাধারণের জন্য ২% সুদ হার, কোম্পানী এবং সম্প্রদায়কে একটি স্পষ্ট এবং সহজে বোঝার পদ্ধতিতে, এই শর্তাবলী এবং শর্তাবলী প্রদান করি। কোন ক্রেডিট চেক প্রয়োজন, 100% নিশ্চিত।
আমাদের ইমেল করুন: (raymondmillionloanfirm@gmail.com)